উজ্জ্বল ত্বক পেতে কে-বিউটি টিপস

কোরিয়ান পপ সংস্কৃতি, কোরিয়ান খাবার, সিনেমা ইত্যাদির পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কোরিয়ান বিউটি। যা কে-বিউটি নামেও পরিচিত। কোরিয়ান সংস্কৃতির এই উত্থানকে কোরিয়ান ওয়েভও বলা হয়। কোরিয়ানদের মতো উজ্জ্বল ত্বক পেতে অনেকেই কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিনের ১০টি ধাপ অনুসরণ করেন। এগুলো হলো- 

অয়েল ক্লিনজার: কে-বিউপির প্রথম ধাপ অয়েল ক্লিনজার। এই ধাপে মেকআপ রিমুভার হিসেবেই অয়েল ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। এমনকি যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের জন্যও এটি কার্যকর। তেল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করায় মেকআপে থাকা ধুলা, সিবাম, এসপিএফ সবকিছু পরিষ্কার করা হয় অয়েল ক্লিনজারে। এজন্য ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন প্রাকৃতিক তেল। 

ওয়াটার বেজড ক্লিনজার: দ্বিতীয় ধাপে কম পিএইচসহ ওয়াটার বেজড ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। মূলত অয়েল ক্লিনজারে যেসব উপাদান রিমুভ করা যায় না সেগুলো রিমুভ করতে ওয়াটার বেজড ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। একটি ভেজা ত্বকে ব্যবহার করা হয় এবং এই ক্লিনজার অয়েল ক্লিনজারের চেয়ে ত্বকের গভীরে গিয়ে পরিষ্কার করে। গ্রিনটি, চালের পানি ওয়াটার বেজড ক্লিনজারের সবচেয়ে ভালো উপাদান।

এক্সফোলিয়েশন: তৃতীয় ধাপ হলো এক্সফোলিয়েশন। মুখ পরিষ্কার করার পর সপ্তাহে দুবার ত্বকের ছিদ্রে আটকে থাকা মৃত কোষ অপসারণে এক্সফোলিয়েশন করা হয়। এটি রাতের বেলা করলে সবচেয়ে ভালো হয়। এক্সফোলিয়েশন করলে ত্বকের শোষণ ক্ষমতা বাড়ে।

টোনার: কে-বিউটির অন্যতম ধাপ হলো টোনার। কোরিয়ান বিউটিতে টোনার বোটানিক্যাল উপাদান সমৃদ্ধ। যা ত্বকের পিএইচ নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং মুখ ধোয়ার পর ত্বককে আরও কোমল করে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে ও রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে।

এসেন্স: এসেন্স হলো কোরিয়ান বিউটির এমন একটি ধাপ যা অন্য রূপ রুটিনকে তৈরি করে বা ভেঙে দেয়। এটি টোনার ও সিরামের একটি মিশ্রণ। যা ত্বককে হাইড্রেট করে এবং ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে। তবে ত্বকের কোনো সমস্যা না থাকলে বা ত্বক খুব তৈলাক্ত হলে এই ধাপটি এড়িয়ে যাওয়া যেতে পারে। 

সিরাম বা অ্যাম্পুল: কোরিয়ান বিউটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সিরাম বা অ্যাম্পুল। এতে এমন সব উপাদান থাকে যা ডিহাইড্রেশন, বয়সের দাগ বা বলিরেখার মতো সমস্যা দূর করে। সিরাম ও অ্যাম্পুল প্রায় একই ধরনের হয়। তবে সিরাম খুবই হালকা তরল এবং অ্যাম্পুল সিরামের চেয়ে ভারী হয়। দিনে বা রাতে যে কোনো সময় সিরাম বা অ্যাম্পুল ব্যবহার করা যায়।

শিট মাস্ক: শিট মাস্ক একটি সুপরিচিত কোরিয়ান পণ্য, যা ত্বকের জন্য আরামদায়ক এবং একই সঙ্গে ব্যবহার করাও খুব সহজ। শিট মাস্ক সিরাম ও হাইড্রেটিং এসেন্সে ভিজিয়ে রাখা হয়। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযুক্ত। মাস্ক সপ্তাহে একবার বা দুবার ব্যবহার করা উচিত।

আই ক্রিম: চোখের চারপাশের ত্বক সূক্ষ্ম ও পাতলা হয়। তাই চোখের চারপাশে ক্রিম ব্যবহারে রিং ফিঙ্গার ব্যবহার করা ভালো। এই ধাপটি রাতের রুটিনে যোগ করা যেতে পারে। তবে কোনো বলিরেখা না থাকলে এই ধাপটি এড়িয়ে যাওয়া যেতে পারে। 

ময়েশ্চারাইজার: ত্বক ভালো রাখতে ময়েশ্চারাইজারের কোনো বিকল্প নেই। কোরিয়ান বিউটি অনুযায়ী, সন্ধ্যায় এই রুটিনটি মানলে ভারী নাইট ক্রিম সবচেয়ে ভালো। আর সকালে মানলে হালকা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। 

সানস্ক্রিন: ইউভিএ ও ইউভিবি রশ্মি থেকে অল-রাউন্ড সুরক্ষা দেবে এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। কোরিয়ান বিউটিতে ৩০+ সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর (এসপিএফ) যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি ইউভিবি রশ্মি থেকে ৯৭ শতাংশ রক্ষা করে। এছাড়া ত্বকের ক্যানসার ও ডিএনএ ক্ষতির আশঙ্কা হ্রাস করে এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যানিংয়ের ক্ষেত্রেও সহায়তা করে।

সাধারণত আমরা যখন রাতে ঘুমাই তখন সারাদিনের ক্লান্তি থেকে ত্বকও বিশ্রাম পায়। তবে মনে রাখতে হবে সুন্দর ত্বকের রহস্য কিন্তু কঠোর স্কিনকেয়ার অনুসরণ করা নয়। এর পেছনে পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার ও পুষ্টিকর ডায়েট জড়িত।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //